প্রত্যাবর্তন

৳ 260

জাহিলিয়্যাত থেকে দ্বীনে ফিরে আসা সেই ভাই-বোনদের গল্পগুলো নিয়েই সংকলন হয়েছে- “প্রত্যাবর্তন”।
বইটি সম্পাদনা করেছেন ‘প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ’ বইয়ের লেখক শ্রদ্ধেয় আরিফ আজাদ ভাই।
বইতে ‘দ্বীনে ফেরা’র গল্প আছে যাদেরঃ 

S M Nahid Hasan, Mohammed Touaha Akbar, ওমর আল জাবির, Rehnuma Bint Anis, Shamsul Arefin Shakti, আরিফুল ইসলাম, রাফান আহমেদ, Muhammad Mushfiqur Rahman Minar, Ashraful Alam, Jakaria Masud, মাসুদ শরীফ, Saifur Rahman, Abdullah Saeed Khan, Nishat Tammim, Kabir Anwar , Ruhul Amin, Shihab Ahmed Tuhin, Mahmudur Rahman, Armaan Ibn Solaiman, Faisal Bin Alam ভাই এবং কলকাতার কিছু রিভার্টেড ভাইদের ইসলামে আসার গল্প নিয়েই লেখা। আশা করছি বইটি উঠতি জেনারেশন, যারা দ্বীন থেকে দূরে আছে, তাদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে, ইন শা আল্লাহ্‌।

লেখক

, , , , , , ,

সম্পাদক

আলী হাসান উসামা

পৃষ্ঠা

225

প্রকাশনী

ভাষা

বাংলা

কোলবালিশ জড়িয়ে ধরে বেঘোর ঘুমে তখন বেহুশ। মানুষ রাতে ঘুমায়, কিন্তু দিনে ঘুমায় কারা? রাত জাগা নিশাচরের দল। রাতগুলোও জম্পেশ। কারো রাত কাটে ইউটিউবে, কারো রাত কাটে ফেইসবুকে। কারো রাত কাটে আড্ডায়। কারো রাত কাটে ক্লাব কিংবা পার্টিতে। এভাবেই কারো কারো নিশ্চুপ রাতগুলো হয়ে উঠে কোলাহলময়, আর কোলাহলময় দিনগুলো হয়ে উঠে নিথর, নিস্তব্ধ।
শুক্রবার। সাপ্তাহিক ইবাদাতের জন্য মসজিদে যাওয়া লাগবে। অন্যান্য দিনের পাঁচ ওয়াক্ত সালাতে না গেলেও সমাজ বাঁকা চোখে কখনোই তাকাবে না। কিন্তু, শুক্রবারের দু’রাকাত ফরজ সালাতের জন্য যদি মসজিদ মুখী না হই, তাহলে সমাজ অগ্নিঝরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলবে,- ‘মুসলমানের ছেলে , অথচ জুমার নামাজটাও পড়ে না…’সমাজ ধরেই নিয়েছে, অন্যান্য দিনের পাঁচ ওয়াক্ত সালাত না পড়লেও আমার মুসলমানিত্ব খারিজ হয়ে যায় না। কিন্তু, যখনই আমি জুমা’র নামাজে যেতে গড়িমসি করি, ঠিক তখনই সমাজ প্রতিবাদী হয়ে উঠে।
সমাজ তখন আমার মুসলমানিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে। আমার ধার্মিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে। যেন কেবল জু’মার দিনের দু’রাকাত সালাত আর দুই ঈদের সালাতই আমার মুসলমানিত্ব এবং ধার্মিকতার মাপকাঠি। বাদবাকি সবকিছু ছেড়েছুঁড়ে দিলেও আমি বেঁচে যাই। আমাকে নিয়ে সমাজের তখন কোন মাথাব্যথা থাকে না।ব্যস! আমিও হয়ে পড়ি সাপ্তাহিক নামাজী। জুমা’র দিনের দু’রাকাত সালাত পড়েই আমি দায় সেরে ফেলি। এরপর আমি মেতে উঠি আমার উন্মত্ত জীবন নিয়ে। এই জীবনে গান আছে, মুভি আছে, খেলাধূলা আছে। আছে প্রেম-ভালোবাসা, বিবাহপূর্ব সম্পর্ক। আছে বয়ফ্রেন্ড, গার্লফ্রেন্ড।এই জীবনে আমার সঙ্গী পর্ণোগ্রাফি। আমার সঙ্গী সিগারেট, কখনো মদ, ইয়াবা এবং হিরোইন। আমি আস্তে আস্তে প্রবেশ করি এক অন্ধকার জগতে। আমি তখনও কিন্তু সাপ্তাহিক মুসল্লী!এই অন্ধকার জগতে আমি আস্তে আস্তে মজে যেতে শুরু করি। আমার কাছে এই অন্ধকার জগতটাই আলোময়। আলোময় জগত আমার কাছে ঘুটঘুটে অন্ধকারের মতো। আমি নিজেকে আবিষ্কার করি এক ভিন্ন রূপে। আমার ঈমাণ, আমার তাকওয়া, আমার ইখলাস- সবকিছু তখন আমাকে ছেড়েছুঁড়ে যেতে শুরু করেছে। আমি ভুলে বসি আমার আমিত্বকে…ইউনিভার্সিটি লাইফ। রক্ত গরম রক্ত গরম ভাব নিয়ে চলি আমি। আশপাশের কাউকে গোনায় ধরার সময় আছে নাকি আমার? ধর্ম? উহু… শুক্রবারে তো আমি মসজিদে যাই। এটাই তো ঢের…
মেডিকেল কিংবা বুয়েটে এসে তো আমি একেবারে ‘সবজান্তা শমসের’ হয়ে গেছি। দুনিয়ায় এমন কি আছে যা আমি জানি না? আকাশ বিদ্যা, সাগরবিদ্যা, পদার্থবিদ্যা, জীববিদ্যা কিংবা রসায়ন- কোন জিনিসটায় আমার দখল নেই? ধর্ম? নাক সিটকিয়ে বলি- উহু! সে তো গ্রাম্য, অশিক্ষিত, মূর্খদের জন্য। পৃথিবীকে আমি জেনে ফেলেছি। ধর্ম দিয়ে করবোটা কী?এভাবে দুনিয়া, রঙীন ক্যারিয়ার এবং ভোগবাদিতা আমার সাপ্তাহিক মুসল্লীর তকমাটাও কেড়ে নেয়। আমি হয়ে পড়ি নিরেট সংশয়বাদী। তখন আমার পৃথিবীতে স্রষ্টা বলে কিছু নেই। ধর্ম বলে কিছু নেই। আমার জীবন তখন ‘খাও-দাও-ফূর্তি করো’ থিওরীতে আবদ্ধ। আমার চারপাশের ধার্মিক লোকগুলো, টুপিওয়ালা, দাঁড়িওয়ালা লোকগুলো তখন আমার কাছে বড্ড ক্ষ্যাত এবং মূর্খ! আমার অহংকার এবং দর্পের পারদ তখন এতো বেশিই উঁচুতে যে, সেখানে দাঁড়িয়ে আমি আমার স্রষ্টাকে ভুলে যাই। স্রষ্টা প্রদত্ত আমার দায়িত্ব ভুলে যাই।
মুসলিমের ঘরে জন্ম নিয়েও আমি হয়ে পড়ি একজন নামকাওয়াস্তে, টাইটেলধারী, নাম সর্বস্ব মুসলমান। সেই ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে আমি পথ চলতে থাকি। আমার চারপাশ ঘন কালো অন্ধকারে ঢাকা। তবুও, আমার মনে হয় আমিই ঠিক পথে আছি। বাকিসব ভুল, মিথ্যা…এরকম অন্ধকারের মধ্যে পথ চলতে চলতে একদিন আমার ঘুম ভাঙে। আমি বুঝতে পারি আমি ঠিক পথে নেই। আমার গন্তব্য যেটা হওয়া উচিত ছিলো, আমি সেই পথ থেকে বিচ্যুত। এতোদিন যেটাকে আমি আলো ভেবে এসেছি, সেটা আসলে আলেয়া। হাওয়া আসলেই নিভে যাবে। যেটাকে আমি জীবন মনে করেছি, সেটা আসলে নরক। এক বিশাল পাপের সাগরে হাঁবুডুবু খেতে খেতে আমি ভুলতেই বসেছি যে, বাঁচতে হলে আমাকে তীরে উঠতে হবে। আমি সেই তীরের সন্ধান না করে উল্টো অহংকার আর দর্পের জন্য পুরোপুরিই ডুবতে বসেছিলাম।আমি চেতনা ফিরে পাই। চোখ মেলে সামনে তাকাই। আমি শুনতে পাই, অদূর থেকে, খুব করুণ আর মায়াভরা স্পর্শে কেউ একজন আমাকে ডাকছে। এই ডাক আমার খুব পরিচিত। আমার খুব চেনা। মনে হচ্ছে, কতো সহস্রবার আমি এই ডাক শুনেছি। কিন্তু কখনোই এই ডাক আমার কাছে এতো আবেদনময়ী মনে হয়নি। কিন্তু, আজকে কেনো যেন এই ডাকটাকে আমার খুব আপন মনে হচ্ছে। চির পরিচিত।আমি অনুভব করলাম, এই ডাক আমার মধ্যে শিহরণ জাগিয়ে যাচ্ছে। আমার বুকের ভেতর, আমার মনের জগতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। কে ডাকে? কে ডাকে আমায়? আমি ছটফট করতে থাকি। আমি শুনতে পাই, তখনও এক মধুর সুরে, এক নৈসর্গিক ঝঙ্কারে কেউ একজন আমায় ডেকে চলেছে…

‘হাই-আল- আস-সালাহহহ…’ ‘হাই-আল-আল ফালাহহহহ…’

আমাকে কল্যাণের পথে কেউ একজন ডেকে চলেছে। আমি সম্বিৎ ফিরে পাই। বুঝতে পারি, এ আমার চিরচেনা সুর। শৈশবের প্রথম কোলাহল। কৈশরের প্রথম ইবাদাতের ডাক… আর আমার যৌবন? হায়! আর একটু হলেই ডুবতে বসেছিলাম…

এভাবেই, মুসলিম হয়েও কতো হাজার হাজার মুসলিম যুবক-যুবতী আজ নিজেদের পথ ভুলে গেছে।
হারানো সেই পথ থেকে কেউ ফিরে আসে, কেউ হারিয়ে যায়। যারা ফিরে আসে, কেমন হয় তাদের গল্পগুলো? জাহিলিয়্যাত থেকে দ্বীনে ফিরে আসা সেই ভাই-বোনদের গল্পগুলো নিয়েই সংকলন হয়েছে- “প্রত্যাবর্তন”।

বইটি সম্পাদনা করেছেন ‘প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ’ বইয়ের লেখক শ্রদ্ধেয় আরিফ আজাদ ভাই।

বইতে ‘দ্বীনে ফেরা’র গল্প আছে যাদেরঃ

১। S M Nahid Hasan – ‘আল কুরআনের ভাষা’ বইয়ের লেখক
২। Mohammed Touaha Akbar – উল্টো নির্ণয় বইয়ের লেখক
৩। ওমর আল জাবির – ‘পড়ো’ সিরিজের লেখক

৪। Rehnuma Bint Anis – ‘নট ফর সেল’, বিয়ে’, জীবনের সহজ পাঠ’ ‘ওপারে’ বইয়ের লেখিকা
৫। Shamsul Arefin Shakti – ডাবল স্ট্যান্ডার্ড এবং কষ্টিপাথর বইয়ের লেখক
৬। আরিফুল ইসলাম – আর্গুমেন্টস অফ আরজু বইয়ের লেখক
৭। রাফান আহমেদ – বিশ্বাসের যৌক্তিকতা বইয়ের লেখক
৮। Muhammad Mushfiqur Rahman Minar – অন্ধকার থেকে আলোতে বইয়ের লেখক
৯। Ashraful Alam – ‘অ্যান্টিডোট’ বইয়ের লেখক
১০। Jakaria Masud – ‘সংবিৎ’ বইয়ের লেখক
১১। মাসুদ শরীফ – বিশিষ্ট অনুবাদক ও সম্পাদক

আছে ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটিতে মলিকুলার বায়োলজি নিয়ে পিএইচডি রত শ্রদ্ধেয় Saifur Rahman ভাইয়ের গল্প, আছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ এর Abdullah Saeed Khan ভাইয়ের গল্প, আছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের Nishat Tammim আপুর গল্প, বুয়েটের Kabir Anwar ভাই, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের Ruhul Amin ভাই, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের Shihab Ahmed Tuhin ভাই, অষ্ট্রেলিয়া প্রবাসী Mahmudur Rahman ভাই, Armaan Ibn Solaiman ভাই, বুটেক্সের Faisal Bin Alam ভাই এবং কলকাতার কিছু রিভার্টেড ভাইদের ইসলামে আসার গল্প নিয়েই লেখা। আশা করছি বইটি উঠতি জেনারেশন, যারা দ্বীন থেকে দূরে আছে, তাদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে, ইন শা আল্লাহ্‌। বইটির শার’ঈ সম্পদনা করছেন Ali Hasan Osama ভাই।

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “প্রত্যাবর্তন”

১ম ধাপ: পছন্দের বইটিকে CART এ এড করুন। অর্থাৎ 'এখনই কিনুন' বাটনে ক্লিক করুন
২য় ধাপ: এবার আপনার CART পেজ এ যান। (ওয়েবসাইট এর উপরের ডান কোণায় CART মেনুতে যান এবং VIEW CART এ ক্লিক করুন)
৩য় ধাপ: আপনার কার্ট আইটেমগুলো দেখে নিন এবং সবকিছু ঠিক থাকলে Proceed to Checkout এ চলে যান।
৪র্থ ধাপ: আপনার শিপিং ঠিকানা ও বিবরণ দিন এবং পেমেন্ট সম্পন্ন করুন
৫ম ধাপ: এরপর PLACE ORDER এ ক্লিক করুন।

একাধিক বই কিনতে: যতগুলো বই কিনতে চান সবগুলো CART এ এড করুন, তারপর চেকআউট করুন।

আপনি অর্ডার করার পর, আমরা পেমেন্ট চেক করবো এবং আপনার বই/বইগুলো ডেলিভারি দেয়া হবে। যে কোনও প্রকার হেল্প এর জন্য আমাদের ফোন অথবা মেইল করুন।